খেতে বসে দেখা গেল, প্লেট থেকে ডিম উধাও। গেল কই! আরেকজনের পাতে চলে গেছে সেই ডিম। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ডাইনিংগুলোতে আজকাল চোখে পড়ছে এমন ছোটখাটো খুনসুটি, আড্ডা।
সকাল থেকে টানা ক্লাস। দুপুরে মেলে ঘণ্টাখানেকের বিরতি। মধ্যাহ্নভোজ সারতে ওই সময়টুকুতেই হলের ডাইনিংয়ে ছোটেন শিক্ষার্থীরা। মাসখানেক আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল না। ছিল নিম্নমানের রান্না আর ‘জোর করে কুপন কাটানোর’ সংস্কৃতি। শিক্ষার্থীরা হলের ডাইনিংয়ে না খেলেও ছাত্রলীগ কর্মীদের চাপে পড়ে কুপন কিনতেই হতো। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শুধু এই পদ্ধতির নয়, খাবারের মানও বদলেছে। প্রতিদিন খাবারের তালিকা বদলাচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও নানা স্বাদ চেখে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকিয়া জাহান বললেন বেগম রোকেয়া হলের ডাইনিংয়ের কথা। তাঁর বক্তব্য, ‘আগে মাছ ও মুরগির তরকারির পাতলা, ফ্যাকাশে ঝোল দেখলেই খাওয়ার রুচি চলে যেত। মনে হতো পানির মধ্যে শুধু হলুদ আর মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে রেখেছে। ডাল নিয়ে তো কোনো কথাই নেই। এতটাই স্বচ্ছ ডাল দেওয়া হতো যে বাটির তলা পরিষ্কার দেখা যেত। এখন খাবারের মান অনেকটা ভালো হয়েছে। মাছ, মুরগির ঝোল থেকে শুরু করে ডাল, ভর্তা, ভাজি, সবজি, ছোট মাছ—সব খাবারেরই মান বেড়েছে। তবে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে হাঁসের মাংস আর সুগন্ধি চালের খিচুড়ি। বৃষ্টির দিনের জন্য থাকে এই বিশেষ আয়োজন। এখন ডাইনিংয়ে গেলে খাবারের ঘ্রাণ পাই। আগে ঢুকলেই পচা গন্ধ এসে নাকে লাগত।’
আগে ডাইনিংয়ের পুরো পরিচালনা প্রক্রিয়াতেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আধিপত্য ছিল। ডাইনিংয়ে কারা খাবেন, কী খাবেন, কখন খাবেন, সব তাঁরাই নির্ধারণ করতেন। অভিযোগ আছে, শিক্ষার্থীদের কুপনের অর্ধেক টাকাও খাবারের পেছনে খরচ করা হতো না। কুপনের টাকা আত্মসাৎ, নেতা-কর্মীদের বিনা মূল্যে ডাইনিংয়ে খাওয়া—এসব ছিল খুব ‘সাধারণ’ রীতি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা নিজ দায়িত্বে ডাইনিংয়ের পরিচালনা পদ্ধতি বদলেছেন।
হল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ৫ থেকে ৬ জনের হল প্রতিনিধিদল নির্বাচন করা হয়েছে, তাঁরাই হলের শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো দেখছেন। তাঁরাই ঠিক করছেন, কোন দিন কোন বর্ষের শিক্ষার্থীরা ডাইনিংয়ের দায়িত্বে থাকবেন। কোনো হলে বর্ষভিত্তিক, আবার কোনো হলে এটি ফ্লোরভিত্তিক। সপ্তাহের দিনগুলো ঘুরে ঘুরে হলের সবাইকেই কিছু না কিছু দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের ডাইনিংয়ের দায়িত্বে আছেন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. বাশিরুল ইসলাম। বললেন, ‘তিনটি বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে—টাটকা খাবার, মানসম্মত রান্না এবং বৈচিত্র্য। প্রতিদিন আড়াই শর বেশি শিক্ষার্থী ডাইনিংয়ে খাচ্ছেন। ৫০ টাকার মধ্যেই মাছ বা মাংস, ডিম, একাধিক ভাজি-ভর্তা পাওয়া যায়। বিনা মূল্যে থাকে ডাল। যার যত খুশি নিতে পারে। এ ছাড়া কখনো কখনো মিষ্টি বা দইও থাকে। খাবার খেয়ে এখন কমবেশি সবার মুখেই তৃপ্তির হাসি দেখা যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রিয়াজ হোসাইন থাকেন ফজলুল হক হলে। বললেন, ‘আগে হলের ডাইনিংয়ের খাবার নিম্নমানের হওয়ার কারণে বাইরে হোটেলে গিয়ে খেতে হতো। বাইরে দাম তুলনামূলক বেশি। ফলে পুষ্টিকর খাবার পাওয়ার আশাও করতাম না। কিন্তু এখন হলের খাবারের মান ভালো হওয়ায় কম খরচে মোটামুটি পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছি। গতকাল রাতেই ৫০ টাকার মধ্যে মোটামুটি ভালো সাইজের রুই মাছের টুকরা, লালশাক, আলু ভর্তা আর মিক্সড সবজি খেলাম হলের ডাইনিংয়ে। মজার ব্যাপার হলো, ভাত এবং ডাল যে যার ইচ্ছেমতো নিতে পারে।’
খাবারের মানের ব্যাপারে লিখিতভাবে মতামত জানানোর সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ডাইনিং ঘুরে স্বাদ চেখে দেখছেন হলের প্রাধ্যক্ষ ও হাউস টিউটররাও। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ শরীফ-আর-রাফি বলেন, ‘খাবারের মান ও বৈচিত্র্যের কথা শুনেই মূলত আগ্রহ হয়েছিল। তাই একদিন ছাত্রদের সঙ্গে বসে পড়লাম। পরিবর্তন এসেছে বলতেই হয়। তবে এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
বেগম রোকেয়া হলের সানজিদা শৈলী, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সাঈদা, নাজমুল আহসান হলের সিয়াম, ঈশা খাঁ হলের সৈকতের মতো শিক্ষার্থীদের এখন আর ডাইনিংয়ে খাবার খেতে বাধ্য করা হচ্ছে না। নিজ আগ্রহেই তাঁরা হাজির হচ্ছেন। একসময় হলের যেই পাচকের রান্না মুখে তোলা যেত না, সবাই এখন তাঁর রান্নার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
স্বাভাবিকভাবেই এসবের প্রভাব শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার ওপরও পড়েছে। প্রত্যেক বেলার খাবারের আয়োজনই যেন একেকটা ছোটখাটো উৎসব। ডাইনিং এখন বন্ধুত্ব, আড্ডা, খুনসুটি আর স্মৃতি তৈরির জায়গা।
সুন্দর একটা পোস্ট দিয়েছেন এজন্য লেখক কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এরকম ব্যবস্থা যদি ধারাবাহিক ভাবে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খাবারের মান সত্যিই অনেক সুন্দর হবে।
আস্তে আস্তে আরো পরিবর্তন হবে , সবকিছু সময়ের ব্যাপার।
Thanks for your helpful information
বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবার সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা গুলো জানতে পারলাম ধন্যবাদ
Khub e sundor 🥰
নতুন সরকারের খাবারের মানের পরিবর্তন সত্যি চোখে পড়ার মতো, প্রশংসনীয় কাজ করে যাচ্ছেন সুন্দর জীবন গড়তে, ধন্যবাদ।💜
amader majha tula dhorar jonno tnx
পরিবর্তন আসবেই , শুধুমাত্র একটু সময়ের অপেক্ষা । অনেক ভালো লিখেছেন ।
সবাই সবার সাথে এভাবেই মিলে মিশে থাকতে হয়
দোয়া করি সবাই মিলে মিশে ভালো ভাবে পড়া লেখা করে দেশের উন্নতি করুক
ধন্যবাদ এত সুন্দর নিউজ দেওয়ার জন্য
Onak valo
Nice post thanks
খুব সুন্দর একটি খবরের ওয়েবসাইট
Good job
God job
এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে
Amer Mona hoi holer khaber er aro develop kora ucet tader kaber Manu gula change kora ucet
ডাইনিং গুলা নিয়মিত চললে ছাত্রদের জন্য ভাল হয়
dramagaming
Nice
Osadharon post
Thank you for your post
এই ওয়েপসাইট টি খুব ভালো ।
আপনার লেখনির মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারলাম।
হলে থেকে সব বন্ধুরা মিলে খাবার খাওয়ার মজাই আলাদা প্লেট থেকে ডিম চুরি আলুর ভর্তা চুরি এর মজাই আলাদা
Nice
Nice Writing
আপনার post গুলা আমার ভাল লাগে
This is a very informative and awareness news for us.Thank you
খুবই, সুন্দর একটা উদ্যোগ,,, আশা করি সামনে আরো ভালো কিছু আসছে,,,।
আমারা চাই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিস্টেম চালু হোক
আস্তে আস্তে আর পরিবর্তন হবে ।
শুধু সময়ের ব্যাপার ।
Good job
Nice post.
Good jab
Not very much but well
সময়ের সাথে সাথে বদলাবে
সুন্দর একটা পোস্ট দিয়েছেন এজন্য লেখক কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এরকম ব্যবস্থা যদি ধারাবাহিক ভাবে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খাবারের মান সত্যিই অনেক সুন্দর হবে।
চমৎকার লেখা
Good Post❤
লেখা গুলা অনেক সুন্দর হয়েছে
Good information
Thanks for sharing information
অনেক সুন্দর
Wow nice
nice
God job
এরকম যদি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোতে হতো তাহলে খুব ভালো হতো।
Amazing Article
খুবই সুন্দর
Verry nice….
Ok
অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ