কাঠমান্ডু এমন উদ্গ্রীব ছিল দুই বছর আগেও। ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ নারী সাফের ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে শিরোপা-স্বপ্ন দেখেছিল নেপাল; কিন্তু পারেনি। সেই ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়েন বাংলাদেশের মেয়েরা।
প্রথমবার সাফ জিতে দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে ছাদখোলা বাসে বাফুফে ভবনে যাত্রা মনিকা-মারিয়াদের…আজীবন মনে রাখার মতো দৃশ্য! আরও একবার বাংলাদেশের মেয়েদের এভাবে বরণ করতে পারবে পুরো দেশ? আরও একবার হবে কি সেই ফুটবল-উৎসব?
দুই বছর আগে যে মুকুট অন্য উচ্চতায় তুলেছিল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে, আজ তা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ পেরোনোর পরীক্ষাই আজ সপ্তম নারী সাফের ফাইনালে দিতে হবে বাংলাদেশকে। দুই বছর আগে দশরথ রঙ্গশালার গ্যালারিভর্তি প্রায় ২০ হাজার দর্শককে থামাতে পেরেছিলেন কৃষ্ণা-শামসুন্নাহাররা। আজও কী পারবেন? উত্তর মিলবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় শুরু ম্যাচ শেষে।
কাঠমান্ডুর বিপণিবিতানগুলোয় এখন বেজায় ভিড়। আগামী শুক্র থেকে রোববার এখানে দীপাবলি, যা স্থানীয় ভাষায় তিহার উৎসব। সেই উৎসবের পালে আগাম হাওয়া লেগেছে রাজধানীর হৃৎপিণ্ডে থাকা বসন্তপুর দরবার স্কয়ারে। উৎসবটা এবার কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে নেপাল আজ প্রথমবার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জিতলে। সেই ট্রফির ছোঁয়া পেতে উদ্গ্রীব কাঠমান্ডুর অলিগলি, হোটেল, রেস্তোরাঁসহ সর্বত্র।
স্বাগতিক নেপাল দুরন্ত ছন্দে। সেমিফাইনালে ১০ জন নিয়েও টুর্নামেন্টে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে গোল করে ম্যাচে ফিরে জিতেছে টাইব্রেকারে। সমতাসূচক গোলদাতা এই মুহূর্তে নেপালের গোটা ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় তারকা সাবিত্রা ভান্ডারি খেলেন ফরাসি ক্লাবে। তিনিই ফাইনালে বড় বড় হুমকি। হুমকি ছিলেন আরেকজন। আরব আমিরাতের ক্লাবে খেলা রেখা পৌডেল। টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ গোল করা রেখা সেমিতে লাল কার্ড দেখায় ফাইনালে থাকছেন না।
রেখার না থাকা বাংলাদেশ দলের জন্য কিছুটা তো স্বস্তিরই। আর অস্বস্তি-কাঁটা নিঃসন্দেহে স্বাগতিক হিসেবে পাওয়া নেপালের বাড়তি সুবিধা। বাংলাদেশ দল অবশ্য জানে কীভাবে স্বাগতিকদের থামাতে হয়। দশরথ রঙ্গশালায় গতকাল দুপুরে ফাইনাল-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তাই খুব আত্মবিশ্বাসী লাগল বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে, ‘আমাদের জন্য এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জও। তবে চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছি আমরা। ভালো খেলেই ফাইনালটা জিততে চাই।’